Widgetized Section

Go to Admin » Appearance » Widgets » and move Gabfire Widget: Social into that MastheadOverlay zone

*বিশ্লেষনধর্মী রিপোর্ট* *এম সি একাডেমী রিইউনিয়ন পথ পরিক্রমা: আমাদের প্রত্যাশা: ১৮ জুলাইয়ের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তসমূহ*

Posted by on July 21, 2016.

*বিশ্লেষনধর্মী রিপোর্ট*

*এম সি একাডেমী রিইউনিয়ন পথ পরিক্রমা: আমাদের প্রত্যাশা: ১৮ জুলাইয়ের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত*

লন্ডনে অনুষ্ঠিত গত ১৮ জুলাইয়ের উন্মুক্ত পরামর্শ সভার মাধ্যমে গোলাপগঞ্জ এম সি একাডেমীর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পূণর্মিলনীর কার্যক্রম আরো একধাপ এগিয়ে গেল।

পরামর্শ সভাতে সকলেই অত্যন্ত খুলাখুলি ও আন্তরিভাবে নিজ নিজ মতামত প্রদান করেন।

বিশেষভাবে প্রথম উদ্যোক্তা আফসরের অংশগ্রহণ সত্যিই খুব আনন্দের ছিল এবং তা খুবই প্রশংসার দাবিদার।

আলোচনাতে সকলেই ছিলেন খুবই আন্তরিক।

রিইউনিয়নের মাহাত্ম্য কেবল আমাদের আন্তরিকতার মধ্যেই নিহিত। কারণ যেখানে আন্তরিকতার অভাব থাকে, পদ-পদবী, টাইটেল আর নেতৃত্ব নিয়ে বেশী আলোচনা করে অনর্থক সময় নস্ট করা হয় সেটা তো রিইউনিয়ন হতে পারে না।

আমি নিজেও বাংলাদেশী। আর প্রসংগক্রমে বলছি আমাদের বাংলাদেশী সমাজের একটি দীর্ঘ্যদিনের প্রতিষ্ঠিত ব্যাধি হচ্ছে সব কিছু ধ্বংস করে দিয়ে হলেও আমার নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নেতৃত্বের প্রতি সীমাহীনভাবে আমরা অতি উচ্চাকাংখী। অথচ দেশ, জাতি ও সমাজকে আমরা কিছুই দিতে পারি না।

আল্লাহ যেন আমাদেরকে এ পুরাতন রোগের হাত থেকে মুক্তিদান করুক।

সর্বাগ্রে এ ব্যাধির বিরুদ্ধে আজ আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে এবং আত্মসমালোচনার মাধ্যমে এ ব্যাধিকে পরাজিত করতে হবে। এ ব্যাধিকে পরাজিত না করা পর্যন্ত আমরা সমাজ, জাতি ও রাস্ট্রীয় জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারব না।

অন্যকে খাট করা, কুতর্ক করা আরেকটি মারাত্মক ব্যাধি আমাদের মধ্যে রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় আমরা তর্কের খাতিরে তর্ক করি। তর্কের মাধ্যমে অন্যকে পরাজিত করতে চাই যদিও এখানে তর্কের মত গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয় নেই।

এসব সমস্যা আমাদের বাংলাদেশী সমাজের জন্য আজো স্বাভাবিক হয়ে আছে। এতে বিব্রত বা বিচলিত হবার তেমন কিছু নেই।

২৪ মের পরে হঠাৎ কোন একদিন শুনেছিলাম এম সি একাডেমীর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটা রিইউনিয়ন হবে। শুনে খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম যে গোলাপগঞ্জ তথা এম সি একাডেমীর হারিয়ে যাওয়া অনেকের সাথে দেখা হবে।

মনে শুধু প্রশ্ন ছিল সে মিলনমেলা কখন হবে, কোথায় হবে আর কারাই বা সে আয়োজনের কাজটা করবে, আমি সেখানে পুরনো দিনের সবার সাথে মিলিত হ্বার সু্যোগ পাব কি না।

খবরে দেখলাম যে স্থান ও তারিখ নির্ধারিত হয়নি। শুধু দেখলাম যোগাযোগ করার জন্য পরিচিত কয়েকজনের নাম ও ছবি। আর তা দেখে খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম। মনে মনে আশা করেছিলাম যে তাদের কাছে থেকে জানতে পারব কোথায় ও কখন মিলনমেনাটি হবে।

কিন্তু এর বাইরে আর কোন প্রশ্ন মনের মধ্যে জাগেনি।

একটিবারের মত মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগেনি যে এরা কজন কোথায় বসেছিলেন এবং কেন সেখানে বসেছিলেন। প্রস্ন জাগেনি যে এটা কেমন স্থান, এটা কি কারো ঘর, কারো বারান্দা, কিচেন না উঠান, না কোন রেস্টুরেন্ট, না কোন কমুনিটি হল অথবা বড় কোন ইন্টার্নেশনাল কনভেনশন সেন্টার।

স্থান নিয়ে যেমন আমার কোন প্রশ্ন ছিলনা তেমনি প্রশ্ন ছিল না ব্যাক্তিদের নিয়েও যে এরা সংখ্যায় কতজন ও কারা। প্রশ্ন জাগেনি য কেনই বা এ বিশেষ কজন ব্যাক্তি ইত্যাদি ইত্যাদি।

আসলে এসব প্রশ্ন উত্থাপন ছিল খুবই বাজে জিনিস। এসব প্রশ্ন উত্থাপন ছিল নিছক ছোটখাটো প্রশ্ন। এসব প্রশ্ন উত্থাপন হল আত্মঅহমিকাবোধ ও আত্মম্ভরিতা থেকে, শুধুমাত্র অন্যকে খাটো ও ছোট করার মানসিকতায়।

বড় প্রশ্ন একটিই ছিল যে মিলনমেলাটি কোথায় হবে, কখন হবে আর কোন না কোন ভাবে আমি সবার সাথে শরিক হতে পারব কিনা। ছিলাম সেই আনন্দের অপেক্ষায়।

কিন্তু ক’দিন যেতে না যেতেই সে আনন্দ হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।

এসব ছোটখাটো প্রশ্নসমূহ উত্থাপন শুরু হয়ে গেল ব্যাক্তিগত আলাপচারিতায়, টেলিফোনে, মিটিং সহ বিভিন্ন মাধ্যমে।

প্রশ্ন উত্থাপন করা হতে লাগল যে এ কয়েকজনের কাছে রিইউনিয়ন আয়োজনের ‘কর্তৃত্ব’
কে প্রদান করল, যারা সে সম্মতি দিল তারা সংখ্যায় কয়জন ইত্যাদি।

ঘুরেফিরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বারবার একই প্রশ্ন উত্থাপন করা হচ্ছে যে আয়োজনের ‘কর্তৃত্ব’ কাদের হাতে ও তাদের প্রতি কত লোকের ‘সম্মতি’ রয়েছে। ওরে বাপরে বাপ! বাংলাদেশের এই ঘৃণ্য কালচার আর ঐতিহ্য আমরা এখানে বৃটেনেও নিয়ে এসেছি। ‘কর্তৃত্ব’ প্রতিষ্ঠার এ আকাঙ্ক্ষা যেন ‘পারস্পরিক সম্পর্ক’এর চেয়েও বেশী গুরুত্বপুর্ণ হয়ে উঠেছে।

এমন এক পর্যায়ে গত ১ জুন এক সভা আহবান করা হয়। এই সভায় আমি নিজেও দাওয়াত পেলাম। মাশাল্লাহ পুরনো দিনের অনেকের সাথে দেখা হল, খুবই ভাল লাগল। খোলামেলা আলোচনাও হল। ২৪ মের সভায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে অনেকে উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সকলেই একমত হন যে ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হবে আর ২৪ মে গঠিত ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সবাইকে তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এবং সাথে সাথে এটাও সিদ্ধান্ত হয় যে এ কমিটির স্বতন্ত্র কার্যক্রম বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর সেই সাথে ২৪ মে গঠিত কমিটির স্বতন্ত্র কার্যক্রম বন্ধের উদ্যোগও গ্রহণ করা হবে। আর দুটির একত্রিকরণের মাধ্যমে এগিয়ে চলবে রিইউনিয়নের সুশৃংখল ও সুসমন্বিত কার্যক্রম।

সভায় ২১ সদশ্য বিশিষ্ট এ কমিটি কিভাবে কাজ করবে, কি কি কাজ করবে, না করবে ও কমিটির সদস্যরা একজন সদস্য হিসেবে কি ভুমিকা নেবে বা নেবে না তা স্পষ্ট করা বলা না হলেও এটাই বোধগন্য হয় যে সামস্টিকভাবে এ কমিটি সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে একটা সমন্বয় সাধন করার জন্য ভূমিকা পালন করবে।

অনেকদিন পার হয়ে গেল। এ কমিটির সদস্যদের সামস্টিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে কোন কার্যক্রম দেখা যায়নি।

২৪ মে ও ১ জুন গঠিত দু’টি কমিটির একটিও স্বতন্ত্র কার্যক্রম বন্ধের ঘোষনা করেনি। দুটি কমিটির একটিও সেই উদ্যোগও গ্রহণ করেনি।

পৃথিবীতে সৌজন্যতা ও শিষ্টাচার বলতে একটা জিনিস আছে। শিষ্টাচার ও সৌজন্যতা দেখালে আমাদের ইজ্জত কমে না। বরং তা বাড়ে এবং পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধিও হয়।

শৃংখলা ও শিষ্টাচারের দাবী হচ্ছে
স্বতন্ত্র কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণার উদ্যগ গ্রহণের দায়বদ্ধতা বেশী রয়েছে ১ জুন গঠিত কমিটির প্রধানের উপর। তবে ২৪ মে গঠিত কমিটির প্রধান সে উদ্যোগ গ্রহণ করলে তাতেও ভুল হওয়ার কিছু ছিল না।

আমি ১ জুন গঠিত কমিটির একজন সদস্য হিসেবে কমিটির প্রধান জনাব আব্দুল হাইকে সে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বারবার অনুরোধ করতে থাকি।

কিন্তু উনি কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। হয়তো বা উনি সু্যোগ করতে পারেননি।

২৪ মে গঠিত কমিটির প্রধান আফসরকেও উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ করেছি।

কিন্তু দু’জনের কেউই আজ পর্যন্ত স্বতন্ত্র কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়ে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের ঘোষণা দেননি।

এমনি এক পর্যায়ে আমার মত অনেকেই এ ধরণের সমন্বয় কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।

আর তাই এম সি একাডেমীর প্রাক্তন কিছু শিক্ষার্থী ভাইয়েরা ১৮ জুলাই এক উন্মুক্ত আলোচনা সভার আহবান করেন। স্থবির হয়ে পড়া কার্যক্রমকে আবারো সক্রিয় করার জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এমনি এক পরিস্থিতে ১ জুনের অনুষ্ঠিত সভার পরে গত ১৮ জুলাইয়ের উন্মুক্ত আলোচনা সভা ছিল একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

সম্মিলিতভাবে এ সভার লিখিত ও অলিখিত সিদ্ধান্তগুলো ছিল নিমরূপ:

*সভা মনে করে যে বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও সামস্টিক উদ্যোগ ও কর্মতৎপরতার মধ্যে সমন্বয় ও সুশৃংখলার অভাব রয়েছে।*

*সমন্বয় সাধন ও সুশৃংখল কর্মিতৎপরতার লক্ষ্যে ব্যাপক ভিত্তিতে পরামর্শসভা, ব্যাক্তিগত যোগাযোগ, গোলটেবিল আলোচনা, প্রচলিত ও ডিজিটাল পদ্ধতিসহ অন্য সম্ভাব্য সকল পন্থায় প্রচারাভিযান পরিচালনা করা।*

*আগ্রহী সকলকে সম্পৃক্তকরণ ও সকলের পারস্পরিক সহযোগীতার মাধ্যমে রিইউনিয়ন অনুষ্ঠানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।*

*নিয়মিতভাবে সামগ্রিক কর্মতৎপরতা পার্যালোচনা করা, পর্যালোচনার আলোকে সুপারিশ প্রণয়ন ও তা প্রকাশের ব্যবস্থা করা।*

*পরবর্তী পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে ২৯ আগস্ট সোমবার লন্ডনে। সময় ও স্থান আবার যথারীতি পরবর্তীতে জানিয়ে দেয়া হবে।*

আবারো পূনরাবৃত্তি করছি এখানে কোন বিরোধ নেই, আছে সমন্বিত কার্যক্রমের অভাব। আশা করি ভুল বুঝার অবকাশ নেই। আন্তরিক মন্তব্য ও পরামর্শ সুসাগত।

[আমীনুর রশীদ (আমীন), Ameenur Rasheed (AMEEN), London, UK, m: +447939847723, e: ameenur1@yahoo.co.uk, dated 21 Julay 2016]