Go to Admin » Appearance » Widgets » and move Gabfire Widget: Social into that MastheadOverlay zone
একজন বাংলাভাষী মুসলিমের দৃষ্টিতে ভাষা দিবস উদযাপন
[আমীনুর রশীদ। Ameenur Rasheed। London। +447939847723। ameenur1@yaho.co.uk]
পৃথিবীর প্রত্যেকটি জীবন্ত ভাষাকে একজন মুসলিম স্ব্বীকৃতি দেয় কারণ ভাষা হচ্ছে একজন মানুষের প্রকাশের একটি মাধ্যম। কোন ভাষার সাথেই একজন মুসলিমের বিরোধ বা আসক্তির কিছুই নেই। একজন মুসলিমের বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে সে তার ভাষাতে সত্য বলছে না অসত্য বলছে, সে তার ভাষাতে ন্যায়পরায়ণতার কথা বলছে না অন্যায়পরণতার কথা বলছে, সে তার ভাষাতে মানবকল্যাণের কথা বলছে না অকল্যাণকর কিছু বলছে।
জীবন্ত ভাষার কথা এ জন্য বিশেষভাবে উল্লেখ্য কারন সেটা ব্যবহার্য। মৃত ভাষা যেমন তাওরাতের ভাষা আরামাইক ও ভারতের মৃত ভাষা সংস্কৃত ইত্যাদি একজন মুসলিম পরিহার করবে কারণ এগুলো মানবজীবনে অব্যবহার্য ও এগুলোতে সময় ব্য্য করা শুধু সময়ের অপচয়। তবে কেউ যদি তার বিশ্বাসের অংশ হিসেবে এসব বিষয়ে আমরা তার এ কার্যক্রমে শ্রদ্ধা পোষণ করব।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে যে তৎকালীন ঢাকা শহরে যে দাংগা হয়েছিল তা হয়েছিল মূলত একটি অন্যায়পরণতার বিরুদ্ধে ন্যায়পরায়ণতার দাংগা। এটা কোন বিশেষ ভাষার বিরুদ্ধে কোন বিশেষ ভাষার দাংগা ছিল না যেমনটি বলা হয়ে থাকে যে এ দাংগা ছিল উর্দু ভাষার বিরুদ্ধে বাংলা ভাষার দাংগা। বরং সে দাংগা ছিল বাংলা ভাষার স্থলে উর্দু ভাষাকে জোর করে চাপিয়ে দেয়ার মত জুলুমের বিরুদ্ধে দাংগা।
একজন মুসলিমের কোন জীবন্ত ভাষার ব্যবহারের প্রতি কোন বিরোধ নেই। বরং একজন মুসলিম তার নিজস্ব ভাষার বাইরে প্রতিটি জীবন্ত ভাষাকে করায়ত্ত করার জন্য উদগ্রীব ও অনুপ্রাণিত থাকে যাতে সে অন্য ভাষার মানুষের কাছে সে সত্য, ন্যায়পরায়ণতা ও মানুবকল্যাণের কল্যাণের কথা প্রকাশ করতে পারে।
তাই একজন বাংলাভাষী মুসলিম যেমন তার নিজস্ব ভাষার পাশাপাশি প্রত্যেকটি জীবন্ত ভাষা হিন্দি, উর্দু, ফারসি, আরবি, ইংরেজি, হিব্রু ইত্যাদি ভাষা করায়ত্ত করার জন্য উদগ্রীব থাকে তেমনি অন্য ভাষার একজন মুসলিমও বাংলাসহ অন্য সকল জীবন্ত পরভাষা করায়ত্ত করার জন্য উদগ্রীব থাকে। কারণ একটাই আর তা হচ্ছে সত্য, ন্যায়পরায়ণতা ও মানবকল্যাণের কথা প্রকাশ করা।
মুসলিম জাতির ইতিহাসে দুঃখজনকভাবে নিজেদের মধ্যে কিছু নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের পারস্পরিক ভূল বুঝাবুঝি ও ব্যক্তিগত অতীব উচ্চাকাংখা কারণে কিছু দাংগা ও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে যা সামগ্রিকভাবে মুসলিম সংস্কৃতিকে ম্লান করে দেয় না বরং তা কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী এ রকমেরই একটি দুঃখজনক বিচ্ছিন্ন ঘটনা যার একদিকে ছিলেন দুর্বল চরিত্রের ক্ষমতাসীন মুসলিম শাসকমহল আর অন্যদিকে ছিলেন তমদ্দুন মজলিসের নামক সংগঠনের নেতৃত্বে থাকা প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ডাকসু ভিপি অধ্যাপক গোলাম আযম সহ আরো অনেক মুসলিম বুদ্ধিজীবী। সে দাংগায় প্রাণ হারান মুসলিম যুবক বরকত, সালাম, রফিক, জব্বারসহ আরো অনেকে। আল্লাহ যেন তাদের শহীদের মর্যাদা দান করুক।
শুরু হল মুসলিম যুবকদের নামে প্রতারণা ও বিভ্রান্তি। পর্দার আড়ালের অশুভ শক্তি এ দাংগাকে পুঁজি করার প্রচেষ্টায় মত্ত হল। দাংগায় নিহত মুসলিম যুবকদের স্মরণে তারা পৌত্তলিকতার আদলে কাল্পনিক বেদী নির্মাণ ও তাতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করতে শুরু করল যা মুসলিম সংস্কৃতিতে সম্পুর্নরূপে নিষিদ্ধ ও অবৈধ।
২১ ফেব্রুয়ারিতে সংঘটিত দাংগা একজন মুসলিমের জন্য আনন্দের নয় বরং বেদনার। তাই এটাকে উদযাপন করা অতীতের আভ্যন্তরীণ বেদনা বিধুর ঘটনা সমূহ যেমন ক্কারবালার হত্যাকাণ্ড ও জংগে সিফফীনের হত্যাকাণ্ডকে উদযাপন করার মতই একটি বিষয় যা শুধু আভ্যন্তরীণ দাংগাকে উসকে দেয়ার জন্য এক ধরনের চতুর তৎপরতা।
তাই আসুন আমরা এ ধরনের অজ্ঞতা বশত পালিত আভ্যন্তরীণ দাংগা উসকে দেয়ার তৎপরতা থেকে আমরা নিজেরা বিরত থাকি এবং অন্যদেরকেও তা থেকে বিরত থাকতে উৎসাহ প্রদান করি।